‘আগামী বোরো মৌসুমে বিনাধান-২৫ উৎপাদনে ভালো ভূমিকা রাখবে’

আগামী বোরো মৌসুমে বিনাধান-২৫কে একটি ‘গুড ভ্যারাইটি’ হিসেবে উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেছেন, এই জাতটি থেকে প্রতি বিঘায় প্রায় ২৭ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এতে ১২ শতাংশ আর্দ্রতা রয়েছে।
গতকাল সোমবার নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বিনা চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন আয়োজিত বিনাধান-২৫ কাটা ও মাড়াই এবং এর ওপর মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান শেষে তার ফেসবুকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এদিকে বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে বিনা উদ্ভাবিত এই জাতটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির উন্নত গুণাগুণ সমৃদ্ধ জাত, অতি লম্বা ও সরু, উচ্চ ফলনশীল, আলোক অসংবেদনশীল ও স্বল্পমেয়াদি (১৩৮-১৪৮ দিন) বোরো ধানের জাত। এ জাতের ডিগা পাতা খাড়া, সরু ও মধ্যম, রং গাঢ় সবুজ। ধান পরিপক্ব হওয়ার পরও ডিগাপাতা গাঢ় সবুজ এবং খাড়া থাকে। এ জাতের গাছ লম্বা কিন্তু শক্ত, হেলে পড়ে না। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১১৬ সেন্টিমিটার। প্রতি গাছে ১০-১২টি কুশি থাকে। ছড়ার দৈর্ঘ্য গড়ে ২৭.০ সেন্টিমিটার। প্রতি শীষে পুষ্ট দানার পরিমাণ ১৫০-১৫৫টি। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ১৯.৭ গ্রাম। ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৫.১ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৬.৬ ভাগ। ভাত সাদা, ঝরঝরে ও সুস্বাদু ফলে বাজারমূল্য বেশি এবং রপ্তানি উপযোগী। এর খড় বিক্রি করেও কৃষক লাভবান হবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আয়োজনে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নাচোলের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনÑ পরমাণু কৃষি বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটটের পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ (বিনা) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাকিনা খানম, নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমে।।
বিনা উপকেন্দ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আহমেদ নুমেরী আশফাকুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেনÑ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিনা উপকেন্দ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জুবায়ের আল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষক সেলিম রেজা। তিনি মুঠোফোনে জানান, এবার তার ৪ বিঘা জমিতে বিনাধান-২৫ আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি বেশ খুশি।
বক্তারা বলেন, দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা বৃদ্ধি করার লক্ষে বিনা উদ্ভাবিত স্বল্পজীবনকাল ফসলের বিকল্প নেই। বিনা উদ্ভাবিত বিনাধান-২৫ উচ্চ ফলনশীল এবং প্রিমিয়াম মানের হওয়ায় এই এলাকায় কৃষকের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি করার লক্ষে অর্থাৎ বছরে জমিতে একাধিক ফসল চাষাবাদ করার জন্য এবং দেশে ভবিষ্যৎ চাল রপ্তানির ক্ষেত্র তৈরিতে বিনাধান-২৫ এর চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Scroll to Top