চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুখ উজ্জ্বল করল শিশু শিক্ষার্থী ঋদ্ধি

সারাদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুখ উজ্জ্বল করল রোহিনী হাসান ঋদ্ধি। জাতীয় পর্যায়ের দুটি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নর্থ ব্রিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঋদ্ধি। তার এ সফলতায় খুশি জেলাবাসী। উচ্ছ্বসিত ঋদ্ধিও।
জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ‘জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা’ ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা’য় অংশগ্রহণ করে আবৃত্তিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ঋদ্ধি। গত ২৬ ও ৩০ জুলাই ঢাকায় এ দুটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় জাতীয় নাট্যশালায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঋদ্ধিকে পুরস্কার প্রদান করে। তার হাতে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি। এর আগে ২৬ জুলাই বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা’য় কবিতা আবৃত্তিতে দ্বিতীয় হয় ঋদ্ধি।
পাঁচ বছর বয়স থেকেই মঞ্চে আবৃত্তি শুরু করা ঋদ্ধির বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্বরূপনগরে। বাবা হাসান আলম ওয়ালটনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্ভিস সেন্টারের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আর মা সায়মা রওশন নূরী গাজীপুরের মুক্তিযোদ্ধা কলেজের ভূগোলের প্রভাষক।
প্রতিভা নিয়ে জন্ম নেয়া ঋদ্ধির কবিতা আবৃত্তির হাতেখড়ি তার মায়ের কাছে। প্রতিভা আছে সংগীত ও চিত্রাঙ্কনেও। এই দুই বিভাগেও পুরস্কার প্রাপ্তি রয়েছে তার। এ পর্যন্ত কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মাত্র আঠার মাসে সে ২৪টি পুরস্কার অর্জন করেছে।
গতবছর একুশে ফেব্রুয়ারি মঞ্চে কবিতা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে পথচলা শুরু হয় তার। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জেলা প্রশাসন, জেলা পাবলিক লাইব্রেরি, ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ও তার স্কুল আয়োজিত অদ্যবধি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছে ঋদ্ধি।
মা সায়মা রওশন নূরী জানান, ঋদ্ধি যখন প্রথম একটি কবিতা আবৃত্তি করেছিল, তখন তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। নূরী আরো জানান, ঋদ্ধির অর্জন করা পুরস্কারের মধ্যে বেশিরভাগই প্রথম স্থানের জন্য।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে জেলার জন্য গৌরব বয়ে আনায় আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঋদ্ধিকে অভিনন্দন জানাই। তিনি আরো বলেন, ঋদ্ধির মতো মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে লালন-পালন করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে লালিত হতে পারে।
শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার ফারুকুর রহমান ফয়সল বলেন, জাতীয় পর্যায়ের দুটি প্রতিযোগিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন রোহিনী হাসান ঋদ্ধি ও পায়েল সাহা বিজয়ী হয়েছেন। এদের মধ্যে ঋদ্ধি কবিতা আবৃত্তিতে দ্বিতীয় এবং পায়েল ছড়াগানে প্রথম হয়েছেন। তাদের এ কৃতিত্বে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত।
শিশু একাডেমির জেলা কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলমও ঋদ্ধি ও পায়েলের সাফল্যে অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, জেলার অন্য শিশুদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে তারা।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৬ জুলাই বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা’য় অংশগ্রহণ করে ছড়াগানে প্রথম স্থান অধিকার করে নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী পায়েল সাহা।
জেলাশহরের হুজরাপুর মহল্লার বিনয় সাহা ও কল্পনা রানী সাহার সন্তান পায়েল বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী কেন্দ্রের ছড়া গান ও লালনগীতির নিয়মিত শিশুশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top