আজ রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট

নীতিমালা তৈরির আশ্বাস না পাওয়া গেলে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) প্রথম প্রহর রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে গোলাম মোস্তফা বলেন, রোববার বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে আশানুরূপ কোনো বার্তা পাওয়া যায়নি। তাই সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট পালন করা হবে। বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি বলেন, নৈতিকভাবে আমরা ধর্মঘটের পক্ষে না। কিন্তু আমাদের বিভিন্ন সমস্যা এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে আমরা এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আজ রাত ১২টার পর  আমাদের ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু হবে। এর মধ্যে কোনো পক্ষ থেকে আমরা যদি দাবি আদায় এবং নীতিমালার সুস্পষ্ট আশ্বাস পাই, সাথে সাথে আমরা ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো। আমাদের ধর্মঘটের কারণে একজন রোগীকেও আমরা কষ্ট দিতে চাই না। কিন্তু সমস্যার সমাধানের আশ্বাস এবং কর্মপরিকল্পনা আমাদের পেতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত কোনো রকম নীতিমালা হয়নি।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রাইভেটকারের মতো অ্যাম্বুলেন্স থেকে বিআরটিএর ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করতে হবে। অতি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স এর জন্য জাতীয় নীতিমালা তৈরি করতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত টোল ফ্রি বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের প্রত্যেকটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স এর পার্কিং সুবিধা দেওয়া, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী থাকা অবস্থায় প্রতিটি পাম্পে সিরিয়াল ছাড়া তেল এবং গ্যাস নেওয়ার সুযোগ দেওয়া এবং সড়কে হয়রানিমুক্ত ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতের দাবিও রয়েছে তাদের।

গোলাম মোস্তফা বলেন, এসব দাবি পূরণের জন্য আমরা ২০১৭ সাল থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছি। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ থাকবে। এদিকে, নীতিমালা তৈরি হলে অ্যাম্বুলেন্স এর সংজ্ঞা যেমন স্পষ্ট হবে, তেমনি এর গঠন, ধরনে ছাড় পাওয়ার আর সুযোগ থাকবে না। অ্যাম্বুলেন্স এর মালিকানায় কারা থাকবেন, ব্যক্তি মালিকানায় অ্যাম্বুলেন্স চলতে পারবে কি না, এই বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে। আর অ্যাম্বুলেন্স এর মানভেদে ভাড়াও নির্ধারণ করে দিতে পারবে সরকার। গত মে মাসে বিআরটিএর প্রতিবেদনে গাড়ির সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সারাদেশে নিবন্ধিত অ্যাম্বুলেন্স আছে আট হাজার ২৮৭টি। অ্যাম্বুলেন্স নিবন্ধনের এই সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আর বিআরটিএর নিবন্ধন ছাড়া চলছে চার হাজার ২১৩টি অ্যাম্বুলেন্স, যা মোট ৩৩.৭০ শতাংশ।

ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির তথ্য মতে, বিভিন্ন সমিতির আওতায় দেশে প্রায় ১০ হাজার বৈধ অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করছে। এর বাইরে ব্যক্তি মালিকানাধীন আরো প্রায় দুই হাজার ৫০০টি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করছে। সমিতি এসব অ্যাম্বুলেন্সকে অবৈধ বলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top